সেনাবাহিনীর মূল লক্ষ্যই হলো বিজয়ী হওয়া : প্রধান উপদেষ্টা
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
০৫-০১-২০২৫ ০৫:৩৬:২৪ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
০৫-০১-২০২৫ ০৭:৩৩:১৩ অপরাহ্ন
সংবাদচিত্র : সংগৃহীত
সেনাবাহিনীর মূল লক্ষ্যই হলো যেকোনো পরিস্থিতিতে বিজয়ী হওয়া, দেশকে রক্ষা করা বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে রাজবাড়ী মিলিটারি ট্রেনিং এরিয়ার (আরএমটিএ) চর খাপুড়া ও চর রামনগর এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের ব্যবস্থাপনায় শীতকালীন ম্যানুভার অনুশীলন পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেনাবাহিনীর মূল লক্ষ্যই হলো বিজয়ী হওয়া, দেশকে রক্ষা করা, সব পরিস্থিতিতে। বলা যাবে না এটা এখন বর্ষার দিন, এখন আর পারব না। এখন বেশি গরম, এটা পারা যাবে না, বলার উপায় নাই। যে কোনো মুহূর্তে, যে অবস্থায় আছে না কেন প্রয়োজনে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয় পূর্ণ সাহস ও প্রস্তুতি নিয়ে। সেটারই একটা মহড়া হল। প্রস্তুতি হিসেবে ভবিষ্যতে বাস্তব যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার জন্য একটা প্রস্তুতি।
তিনি বলেন, আমরা সিনেমার পর্দায় যুদ্ধ দেখি সবসময়, সম্মুখ যুদ্ধ দেখি, ইতিহাসের বহু বড় বড় যুদ্ধ আমরা সিনেমার পর্দায় দেখি। প্রথম মহাযুদ্ধের, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের একাবারে প্রকৃত ছবিগুলো দেখি। নানা ব্যাটল তার শত্রুর সম্মুখে হয়েছে সেই দৃশ্য দেখি। করুণ দৃশ্য দেখি, সাহসের দৃশ্য দেখি। অনেকগুলো আমাদের স্মৃতিতে অমর হয়ে থাকে, সারা পৃথিবীর স্মৃতিতে অমর হয়ে থাকে। তাদের বীরত্বের জন্য এবং সাহসের জন্য। সম্পূর্ণ অসহায় অবস্থা থেকে কীভাবে পুরো জিনিসটাকে পাল্টে দিয়ে জয়কে ছিনিয়ে নিয়ে আসে, সেই দৃশ্য দেখেছি। বহু ব্যাটল পৃথিবীতে বিখ্যাত হয়ে আছে। এক একটা ব্যাটেল কীভাবে লড়াই করেছে কীভাবে জিতেছে, কীভাবে শত্রুর কাছ থেকে বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে এসেছে-সবকিছুর প্রস্তুতি এভাবেই হয়।
ভবিষ্যতে সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা আরও আধুনিকায়নের আশ্বাস দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রশিক্ষণই সর্বোত্তম কল্যাণ, এই মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ হয়ে আধুনিক ও যুগপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আভিজানিক দক্ষতা অর্জন করে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যগণ সর্বদা প্রস্তুত থাকবে। সেই লক্ষ্যে সেনা সদস্যদের প্রশিক্ষণ হতে হবে বাস্তবসম্মত। আমি নিশ্চিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণের এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই এইরকম একটি মহড়া আয়োজন করতে হলে অনেক পরিশ্রম, পরিকল্পনা ও সমন্বয়ের প্রয়োজন।
সেনাবাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, এই মহড়া দেখে আমি বুঝতে পারছি, এই আয়োজন ৫৫ ডিভিশনের সব সদস্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। তাই আমি কনিষ্ঠতম সৈনিক হতে জিওসি পর্যন্ত সব পদবীকে ধন্যবাদ দিতে চাই। এছাড়া আমাকে এখানে মহড়ায় আমন্ত্রণ জানানোর জন্য সেনাবাহিনীর প্রধানকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ দিতে চাই। বরাবরের মতোই বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর দেশের সম্মান ও গৌরব অটুট রাখতে জনগণের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে এবং যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সর্বদা নিজেদেরকে প্রস্তুত রাখবে এই প্রত্যাশা রাখছি।
এর আগে বেলা ১১টা ৫৪ মিনিটে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে রওনা হন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দুপুর সাড়ে ১২টা ৩৬ মিনিটের দিকে প্রধান উপদেষ্টাকে বহন করা হেলিকপ্টারটি কালুখালীর মিলিটারি ট্রেনিং এরিয়ার চর খাপুড়ায় হেলিপ্যাডে অবতরণ করেন।
অনুশীলনস্থলে পৌঁছালে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অভ্যর্থনা জানান সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান, বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান এবং জিওসি, ৫৫ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার, যশোর এরিয়া মেজর জেনারেল জে এম ইমদাদুল ইসলাম।
এরপর তিনি প্রায় ১ ঘণ্টাব্যাপী ম্যানুভার অনুশীলন প্রত্যক্ষ করেন। প্রধান উপদেষ্টা অনুশীলন প্রত্যক্ষ শেষে সমাপনী বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে অন্যান্য উপদেষ্টা, সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং গণ্যমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলা স্কুপ/ ডেস্ক/ এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স